-
ফিরবো ঘরে কোথায় এমন ঘর
ভোর ৪:৩৮ এ বাস নামিয়ে দিলো চান্দিনা। এত তাড়াতাড়ি চলে আসবো ভাবতেও পারিনি। ফজরের জামাত ৬:১০ এ। এখনো প্রায় দেড় ঘন্টা বাকি। কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। রামমোহন রোডের মাথায় গিয়ে দেখলাম একটা সিএনজি দাঁড়িয়ে আছে। ভাড়া চাইলো দেড়শো। ১২০ পর্যন্ত বলে একটা চায়ের দোকানে এসে বসলাম। পরোটা ভাজছে সাথে চলছে স্পিকারে কাওয়ালি গান।…
-
খুঁজিয়া বেড়াই, বারেবারে…
গত দুদিন যাবৎ বৃষ্টি হচ্ছে– একঘেয়ে, একটানা। রাস্তা-ঘাটে পানি-টানি উঠে বিশ্রী অবস্থা, থলথলে কাঁদা, জুবজুবে ভেজা শার্টে ছেয়ে গেছে গোটা শহরটা। পত্রিকার ভাষায়– “টানা বর্ষনে নাকাল শহরবাসী।” কথা ঠিক! আমি নাকাল হয়ে পড়ছি। আমি নাকাল পড়ছি এক অদ্ভুত ভালো লাগার ঘোরময় বিষন্নতায়, ঘরের জানালার কাছে থাকা গাছটার একটানা সরসর শব্দটায়, হীম করা বাতাস আর মাটির…
-
আলোকিত অন্তর
গতকাল রাত ১১টা ৩০ মিনিট। সন্ধ্যা থেকে ঝুমঝুম বৃষ্টি শেষে ওই সময়টায় আকাশের পানি একটু কমছে। এমন সময় আমাদের সদর দরজায় কে যেনো কড়া নাড়ছে। জানতে পারলাম পাড়ার এক বড় আপা আমার সাথে দেখা করতে এসেছেন। উনার মুখে শুনলাম আমাদের এলাকার বিহারী বুড়ি নামে পরিচিত একজন মহিলা সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে ইন্তেকাল করেছেন কিন্তু…
-
আমি তোমাকেই বলে দিবো, সেই ভুলে ভরা গল্প…
এক সময় আমার খুব প্রিয় একটা লাইন ছিল— “আমি তোমাকেই বলে দিবো, সেই ভুলে ভরা গল্প, কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়।” লোকটা কিসের ভুল দরজায়, কার ভুলে কড়া নেড়ে উদাস হয়েছিলো আমি নিশ্চিত নই। তবু লাইনটা যতবার শুনেছি এক গভীর বিষণ্ণতায় ডুবে গেছি। আমার পুরোনো তীব্র মাথা ব্যাথাটা আজ আবার চেপে ধরেছে। এলোমেলো শব্দগুলো ছুটে…
-
আমার নৈঃশব্দময় শব্দগুলো
এ পৃথিবীটা এত অদ্ভুত ভাবে আল্লাহ তায়ালা তৈরি করেছেন ভাবা শুরু করা মাত্রই আমি খেই হারানো শুরু করি। প্রবল অস্থিরতায় এদিক ওদিক তাকাই—জানালা দিয়ে ঝিরঝির বৃষ্টির ফোঁটাগুলো আমার চোখের হাজার মেগাপিক্সেল দিয়ে ধারণ করতে থাকি, ভালো লাগা বাড়াতে চাই। বাড়ে না, বাড়ে বিষণ্ণতা। এ পৃথিবীর কোনো এক কোণে; আফগান কিংবা সিরিয়ায় ঠিক এমুহূর্তে হয়তো পথের…
-
স্বপ্নের গল্প
আজ আমার স্বপ্নগুলোর গল্প বলবো। হাসা যাবে না। আচ্ছা ঠিক আছে, ঠিক আছে। মুচকি মুচকি হাসা যাবে। স্বপ্ন জিনিসটাকে আমার সবসময় অদ্ভুত সুন্দর মনে হয়েছে। স্বপ্ন সম্ভবত ভেতরের সবচেয়ে সুন্দর সুন্দর আশার প্রতিফলন। ব্যাপারটা আমি এখনো ঠিক বুঝে উঠিনি, আর সেই চেষ্টাও নেই। আমি বড় বড় মানুষদের বড় বড় স্বপ্ন দেখেছি। তাঁরা বড় বড় স্বপ্ন…
-
উৎসবের পর
উৎসব শেষের নিস্তব্ধতাকে আমি প্রচন্ড ভয় পাই। এই সময়টা যে কী অদ্ভুত হাহাকার জাগানিয়া সেটা আমি প্রথম বুঝতে পারি এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে। তখন খুব ছোট। হৈ হৈ করতে করতে গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ির ছাদটা মেতে থাকলো। এরপর একটা সময় সবাই কীভাবে কীভাবে যেন হঠাৎই দুম করে গায়েব হয়ে গেলো। ঘণ্টাখানেক আগের মানুষে গমগম করা…
-
খুঁজিয়া বেড়াই
সেদিন হঠাৎ করেই আবিষ্কার করলাম—আমি আমার এই জীবনে তিনটা দশক দেখে ফেলেছি—৮০, ৯০ এবং ২০০০। প্রায় তিনটা ভিন্ন ভিন্ন দশক, ভিন্ন ভিন্ন সময়। যতই মনে মনে নিজেকে ৯০ দশকের সেই অস্থির কিশোরটা হিসেবে কল্পনা করি না কেন আর মাত্র অল্প ক’টা দিন পরেই একজন মধ্যবয়স্ক মানুষ হিসেবে সবাই আমাকে কৃত্রিম/অকৃত্রিম সম্মান প্রদর্শন করবে। নামের শেষে…
-
মাটি!
আকাশে কিছু চিল পাক খাচ্ছে বারবার! ট্যাঁ ট্যাঁ শব্দ। রহমত মিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দীর্ঘ রাতের ক্লান্তি আর বিষন্নতায় কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছেন মনে নেই। চারদিকে কেমন শান্তি শান্তি একটা ভাব। ভয়ংকর ঝড়ের শেষ কিংবা উৎসব শেষের হাহাকারের মতো চারদিক শান্ত। নিথর। সূর্যটা সবে আড়মোড়া ভাঙা শুরু করেছে। গা জুড়ানো বাতাস আর শব্দ বলতে কেবল…